অন্যান্য

আহ্নিক গতি ও আহ্নিক গতির ফলাফল

আহ্নিক গতি

পৃথিবী নিজ অক্ষে বা মেরুরেখায় পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে। এভাবে এক বার আবর্তন করতে পৃথিবীর প্রায় ২৪ ঘণ্টা বা একদিন সময় লাগে। ঠিক হিসেবে এ সময় হল ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড। পৃথিবীর এই গতিকে আহ্নিক গতি (Diurnal Motion) বা দৈনিক গতি এবং এ সময়কে সৌরদিন বলা হয়। নিরক্ষরেখায় পৃথিবীর পরিধি সবচেয়ে বেশি তাই এখানে আহ্নিক গতির বেগ কম। পক্ষান্তরে মেরুদ্বয়ের দিকে পরিধি ক্রমশ কমতে থাকে বলে গতিও বৃদ্ধি পেয়ে থাকে ।

আহ্নিক গতির ফলাফল

(১) আহ্নিক গতির ফলে দিন ও রাত হয়। পৃথিবীর নিজস্ব কোনো আলো নেই। সূর্যের আলোতে পৃথিবী আলোকিত হয়। পৃথিবী গোলাকার বলে সূর্যের আলো একই সময়ে ভূপৃষ্ঠের সকল অংশে পড়ে না । আবর্তনের সময় যে অংশে আলো পড়ে সেখানে দিন এবং যে অংশ অন্ধকারে থাকে সেখানে রাত হয়।

পরীক্ষা : একটি অন্ধকার ঘরে টেবিলের ওপর জ্বলন্ত মোমবাতিকে সূর্য এবং ভূগোলককে পৃথিবী ধরে জ্বলন্ত মোমবাতির সামনে ভূগোলকটিকে ঘুরালে দেখা যাবে বাতির সম্মুখের অংশ আলোকিত এবং তার বিপরীত অংশ অন্ধকার থাকে। আলোকিত অংশে দিন ও অন্ধকার অংশে রাত হয়। পৃথিবীর আলোকিত ও অন্ধকার অংশের মধ্যবর্তী বৃত্তাকার অংশকে ছায়াবৃত্ত বলে। সূর্যোদয়ের এবং সূর্যাস্তের অব্যবহিত আগের ও পরের সময়কে যথাক্রমে ঊষা ও গোধূলি বলে।

 

(২) আহ্নিক গতি সমুদ্রস্রোত ও বায়ুপ্রবাহের ওপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। পৃথিবীর পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তনের জন্য সমুদ্রস্রোত ও বায়ুপ্রবাহ সোজা উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত না হয়ে ফেরেলের সূত্র অনুসারে উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়।

আরো পড়ুন : আগস্ট মাসে যে বিখ্যাত ব্যক্তিদের মৃত্যু

(৩) আহ্নিক গতির ফলে সময় গণনা করা যায়। পূর্ণ আবর্তনকে ২৪ ঘণ্টা ধরে ঘণ্টা, মিনিট ও সেকেন্ডে বিভক্ত করে সময় গণনা করা হয়

(৪) আহ্নিক গতির জন্য পৃথিবীর যে অংশ চাঁদের দিকে থাকে, চাঁদের আকর্ষণে সেখানের জলভাগে জোয়ার হয় ।

(৫) আহ্নিক গতি না থাকলে পৃথিবীর অর্ধাংশে চিরকাল দিন ও বিপরীত অর্ধাংশে চিরকাল রাত থাকত ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button